৪৯ বছর অপেক্ষার পর ধরা দিল নৌকা !

দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় ত্যাগের পুরস্কার হিসেবে নৌকার টিকেট পেয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের। তিনি ‘ভিপি জোয়াহের’ হিসেবে পরিচিত। এ পুরস্কার হিসেবে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান তিনি।

জোয়াহেরুল ইসলাম ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। দীর্ঘ ৪৯টি বছর তিনি একটি দিনের অপেক্ষায় ছিলেন। জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সাতবার তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে বঞ্চিত হয়েছেন। টাঙ্গাইলের ক্লিন ইমেজের এই নেতা গত কয়েক দিনে নির্বাচনী এলাকা সফরকালে তার নৌকা পাওয়ার এ অপেক্ষার কথা জানান।

তিনি ১৯৭৯ সালে সরকারি সাদত কলেজের কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এবং একই বছর টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ১৯৮৩ সালে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মনোনয়নপ্রাপ্ত হয়ে প্রথমবারের মতো বিপুল ভোটের ব্যবধানে সরকারি সাদত কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন।

১৯৮৮-৮৯ সালে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রলীগের নেতা থাকার কারণে দুবার কারাভোগ করেন। কারাগারে অন্তরিন অবস্থায় দ্বিতীয়বারের মতো সরকারি সাদত কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও তিনি একবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও তিনবার সদস্য ছিলেন।

জোয়াহেরুল ইসলাম গত কয়েক দিনে তার নির্বাচনী এলাকা সখীপুর ও বাসাইল সফর করেছেন। এলাকার মানুষদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। এ সময় দলীয় নেতা-কর্মীরা তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন।

জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, ৪৯টি বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। যতবার মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, ততবার তার মনোবল দৃঢ় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এমপি হওয়ার চেয়ে শেখ হাসিনার নিবেদিত কর্মী হওয়াই ছিল গর্বের। তাই তিনি শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ একজন কর্মী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করেন।

তিনি বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করেই এ পর্যন্ত এসেছি। ভবিষ্যতেও এ মূল্যায়ন তার থাকবে। শেখ হাসিনা তার নিবেদিত একজন কর্মীকে মনোনয়ন দিয়েছেন বলে অভিহিত করে বলেন, আমার নির্বাচনী আসনটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ও আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এলাকা।

তৃণমূল জনপ্রিয়তা বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দখলে থাকা এ আসনের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পরবর্তী সময়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নতুন প্রার্থীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারও সক্ষম হবে এবং তার পক্ষে দলের সব নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছেন।

সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদকমুক্ত একটি মানবিক টাঙ্গাইল-৮ আসন গড়তে ও সখীপুর-বাসাইলকে উন্নয়নের নতুন আঙ্গিকে সাজাতে চান।

তিনি আশা করেন, বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন এবং সখীপুর ও বাসাইল উপজেলাবাসীর উন্নয়নে এলাকাবাসীর সমন্বয়ে গঠিত মাস্টার প্ল্যান করে সার্বিক উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রয়াস চালাবেন।